লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর হোমিও চিকিৎসা - গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে করণীয়

প্রিয় পাঠক, আপনি কি গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ কি , গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে করণীয় কি এবং গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর হোমিও চিকিৎসা কি তা জানতে চাচ্ছেন কিন্তু এর সঠিক কোন তথ্য পাচ্ছেন না? তাই এই আর্টিকেলটিতে আমরা আপনাদের জানাবো, গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ কি , গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে করণীয় কি এবং গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর হোমিও চিকিৎসা কি তার বিস্তারিত।
লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) কি-গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) প্রতিরোধে করণীয়
লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) সর্বপ্রথম ১৯২৯ সালে আফ্রিকার দেশ জাম্বিয়া তে সনাক্ত হয়। এরপর ১৯৪৩ থেকে ১৯৪৫ সালের মধ্যে পুরো আফ্রিকা মহাদেশে এ রোগটি ছড়িয়ে পড়ে। লাম্পি স্কিন ডিজিজ বাংলাদেশে প্রথম ২০১৯ সালের মাঝামাঝি চট্টগ্রামে দেখা দেয়। তাই চলুন দেখেনি,লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর হোমিও চিকিৎসা, গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ কি এবং গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে করণীয় কি।

ভূমিকা

এই পুরো আর্টিকেল জুড়ে আমরা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করব , লাম্পি স্কিন ডিজিজ কি ,লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর হোমিও চিকিৎসা, লাম্পি স্কিন ডিজিজ কেন হয় ,লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ ,লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে করণীয় এবং লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম সহ লাম্পি স্কিন ডিজিজ সম্পর্কিত সকল তথ্য।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ কি 

    এটি একটি ভাইরাস ঘটিত পক্স বা লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) রোগ।যেটি মূলত গরু এবং মহিষকে আক্রান্ত করে। । এই রোগ প্রাথমিকভাবে প্রাণীর গায়ে ছোট এবং বড় ফোসকা দেখে সনাক্ত করা হয়। লাম্পি স্কিন ডিজিজ হলে সকল ধরনের খামারিরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই রোগের ফলে গরু ও মহিষ থেকে মাংস উৎপাদন এবং দুধ উৎপাদনে অনেক বড় ধরনের ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়। অনেক সময় এই রোগের ফলে গর্ভবতী গরু ও মহিষের গর্ভপাতও হয়ে যেতে পারে, এবং মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।

    লাম্পি স্কিন ডিজিজ কেন হয়

      যেহেতু এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ তাই এক দেশ থেকে আরেক দেশে, এক খামার থেকে আরেক খামারে বা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে আক্রান্ত গরুকে নিয়ে যাওয়ার কারণে এ রোগ ছড়াতে পারে। এই রোগের প্রধান বাহক মশা, মাছি এবং আঠালো। মূলত যে মশা, মাছি এবং আঠালোগুলো গরু বা মহিষের দেহ থেকে রক্ত পান করে তারাই এ রোগের জীবাণু বহন করে।
      আক্রান্ত আক্রান্ত গরু দ্বারা প্রজনন করলেও এ রোগ হতে পারে। এছাড়া আক্রান্ত গাভীর দুধ থেকেও এ রোগ সৃষ্টি হতে পারে।মূলত বর্ষার শেষে, শরতের শুরুতে বা বসন্তের শুরুতে অর্থাৎ যে সময় মশা মাছি অনেক বেশি বংশবিস্তার করে সে সময় এ রোগটি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়তে দেখা যায়।

      লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ

        • লাম্পি স্কিন ডিজিজ আক্রান্ত গরু সর্বপ্রথম জ্বরে আক্রান্ত হবে।
        • গরু কম খাবে অর্থাৎ খাবারের রুচি কমে যাবে।
        • মুখ ও নাক দিয়ে লালা বের হবে।
        • কোন না কোন পা ফুলে যাবে।
        • গলার নিচের কম্বলে পানি জমে যাবে।
        • প্রাথমিকভাবে শরীরে বিভিন্ন জায়গার চামড়াই গোল আকৃতি পিণ্ড ধারণ করবে। এবং ধারাবাহিকভাবে এই গোলাকৃতি পিণ্ড পুরো শরীরে ছড়িয়ে পড়বে। এটি মুখের মধ্যে পায়ে এবং অন্যান্য জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
        • গোলাকৃতি পিণ্ড গুলো ফেটে রক্ত এবং টুকরো মাংসের মত বের হয়ে ক্ষত হয় ও পুঁজ বের হয়।
        • অনেক সময় গরুর মুখে ঘা হওয়ার জন্য পানি এবং খাবারে অনিহা হতে পারে। হ্যাঁ বাসাতে

        লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে করণীয়

        যেহেতু এটি ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট, এই রোগ কোন এন্টিবায়োটিক দ্বারা কাজ করে না। বেশি মাত্রায় এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে আক্রান্ত প্রাণী দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তাই লাম্পি স্কিন ডিজিজ (LSD) প্রতিরোধে করণীয় কি তা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হল। প্রতি ১০০ থেকে ২০০ কেজি ওজনের প্রাণীর জন্য নিম্নোক্ত ঘরোয়া চিকিৎসায় ভালো ফলাফল পাওয়া যায় ।

        • প্যারাসিটামল ট্যাবলেট সকালে 1টি বিকালে 1টি। 
        • খাবার সোডা সকালে 50 গ্রাম বিকালে 50 গ্রাম। 
        • নিম পাতা বাটা সকালে 25 গ্রাম বিকালে ২৫ গ্রাম। 
        • লবণ সকালে ২৫ গ্রাম বিকালে ২৫ গ্রাম। 
        • গুড় বা চিটাগুড় সকালে ৫০ গ্রাম বিকালে ৫০ গ্রাম। 

        লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম

        উপরোক্ত উপাদান দুই ভাবে ব্যবহার করা যায়। প্রথমত, এই উপাদান গুলো ১ লিটার পানিতে মিশিয়ে সকালে এবং বিকালে সাত দিন খাওয়াতে হবে। এবং দ্বিতীয়ত, গরুর সকালের এবং বিকালের যে পানি খাওয়ানো হয় তার সাথে এই উপকরণ গুলো মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। এভাবে খাওয়ালে আক্রান্ত গরু দ্রুত সেরে উঠে।
        তবে, আক্রান্ত স্থান ক্ষত হয়ে গেলে সালফাভেট বা সুমিডভেট পাউডার লাগাতে হবে।এছাড়া আক্রান্ত গুরুকে অবশ্যই ছায়াযুক্ত স্থানে মশারির ভিতরে রাখতে হবে। গরু রাখার জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার রাখতে হবে যেন কোনক্রমে মশা মাছি প্রাণীর শরীরে বসতে না পারে।

        লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর হোমিও চিকিৎসা

        বর্তমানে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ বা LSD রোগের জন্য হোমিও চিকিৎসা বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। এই রোগ যেন না হয় সেজন্য সুস্থ গরুকে ক্যালকেরিয়াকার্ব ২০০ ঔষধ সকালে এবং বিকালে চার থেকে পাঁচ ফোটা ডিস্ট্রিল পানির সাথে মিশিয়ে ১৫ দিন খাওয়াতে হবে। অথবা নেট্রাম সালফ ২০০ সকালে এবং বিকালে চার থেকে পাঁচফোঁটা ডিস্ট্রিল পানির সাথে মিশিয়ে ১৫ দিন খাওয়াতে হবে।

        জরুরী

        গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ আক্রান্তের লক্ষণ প্রকাশ পেলে দ্রুত রেজিস্টার্ড ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।

        শেষ কথা

        প্রিয় পাঠকবৃন্দ এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা আপনাদের লাম্পি স্কিন ডিজিজ কি,লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর হোমিও চিকিৎসা ,লাম্পি স্কিন ডিজিজ কেন হয় ,লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের লক্ষণ ,লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধে করণীয় এবং লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের ঔষধ ব্যবহারের নিয়ম সহ লাম্পি স্কিন ডিজিজ সম্পর্কিত সকল তথ্য।
        আরো পড়ুনঃ গরুর কিছু পরিচিত রোগ এবং তার চিকিৎসা ও ঔষধ
        তাই এই আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে এবং কোন উপকারে এসে থাকে তবে অবশ্যই আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনারা আপনাদের বন্ধু-বান্ধবের সাথে শেয়ার করবেন এবং আমাদের ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ফলো করবেন।

        ধন্যবাদ

        এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

        পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
        এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
        মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

        Club Solver এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

        comment url